ছানি কি?

চোখের ভিতরে একটি স্বচ্ছ লেন্স থাকে। যদি কোন কারণে এই স্বচ্ছ লেন্সটি অস্বচ্ছ হয়ে যায়, তখন তাকে ছানি বলে। ডাক্তারি ভাষায় একে বলা হয় ক্যাটারেক্ট (CATARACT).

ছানির কারণ কি?

অনেকগুলো কারণে চোখে ছানি পড়তে পারে। যেমন:

জন্মগত কোন ত্রুটি থাকলে, অল্প বয়সে ছানি পড়তে পারে,

বার্ধক্যজনিত কারণে,

চোখে আঘাত পেলে,

চোখে কোন প্রদাহ হলে এবং

ডায়াবেটিস এর কারণে।

তবে সবচেয়ে বেশী ছানি হয় বার্ধক্যজনিত কারণে।

ছানি রোগের লক্ষন কি?

ছানি রোগের অনেকগুলো লক্ষণ আছে, এর মধ্যে অন্যতম প্রধান লক্ষণ হচ্ছে-

কোন বস্তুকে ঝাপসা দেখা।

ধীরে ধীরে কম দেখা।

পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ না দেখা এবং অন্ধ হয়ে যাওয়া।

ছানির চিকিৎসা কি?

ছানির চিকিৎসা ঔষধ কিংবা চশমা দিয়ে হয় না। ছানির একমাত্র চিকিৎসা অপারেশন।

ছানির চিকিৎসা কি?

দৃষ্টি ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।

বেশী দেরী করলে গ্লুকোমা, প্রদাহ, তীব্র ব্যাথাসহ পুরোপুরি অন্ধ হয়ে মারাত্মক জটিলতা বয়ে আনতে পারে।

ছানির জন্যে কি অপারেশন করা হয়?

ছানি অপারেশনে, চোখের ভিতরের অস্বচ্ছ লেন্সটি বের করে তার জায়গায় কৃত্রিম স্বচ্ছ লেন্স বসানো হয়। ছানি অপারেশন বিভিন্নভাবে করা হয়। যেমন:-

১) ফ্যাকো সার্জারী (মেশিনের মাধ্যমে সেলাই বিহীন ছানি অপারেশন)

২) এস.আই.সি.এস (SICS), সেলাই বিহীন (মেশিন ছাড়া চোখ অল্প কেটে অপারেশন)

৩) প্রচলিত ছানি অপারেশন (সেলাইযুক্ত)

প্রতিস্থাপিত লেন্স (Intraocular Lens) কি?

চোখের ভিতরের অস্বচ্ছ লেন্সটিকে সরিয়ে যে কৃত্রিম লেন্সটি বসানো হয়, তাকে প্রতিস্থাপিত লেন্স বলে।

শক্ত লেন্সের (Rigid IOL) অসুবিধা সমূহ?

১. শক্ত বলে ভাঁজ করা যায় না। ফলে বেশী কাটতে হয়।

২. বেশী কার্টার কারণে ব্যথা এবং কষ্ট বেশী হয়।

৩. চোখে ইন্জেকশন দিতে হয়।

৪. চোখে ব্যান্ডেজ দিতে হয়।

৫. সেরে উঠতে বেশী সময় লাগে।

৬. চোখের মনির আকৃতির পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে, ফলে দূরে এবং কাছে অসমান দেখা যায়

৭. পূনরায় ছানি হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। সেক্ষেত্রে দৃষ্টিশক্তি পুনরায় কমে যায়।

নরম লেন্সের (Foldable IOL) সুবিধা সমূহ?

নরম হওয়ায় ভাঁজ করা যায়। ফলে শুধুমাত্র একটি ছিদ্র করে লেন্স প্রতিস্থাপন করা যায়।

২. কম কার্টার কারণে ব্যথা এবং কষ্ট কম হয়।

৩. সেরে উঠতে কম সময় লাগে।

৪. চোখের মনির আকৃতির পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।

৫. পূনরায় ছানি হওয়ার সম্ভাবনা শক্ত লেন্সের চেয়ে অপেক্ষাকৃত অনেক কম।

ফ্যাকো সার্জারী কি?

ফ্যাকো সার্জারী, ছানি অপারেশনের এক আধুনিক পদ্ধতি। এটি একটি সহজ অপারেশন। একটি ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে ফ্যাকো মেশিনের সাহয্যে ঘোলা লেন্সটিকে ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরায় বের করে আনা হয় এবং তার জায়গায় একটি নতুন কৃত্রিম লেন্স বসানো হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। এই কৃত্রিম লেন্সটি পূর্বের স্বাভাবিক লেন্সের মত কাজ করবে।

ফ্যাকো সার্জারীর সুবিধাসমূহ:

১। এই পদ্ধতিতে ঘোলা লেন্সটিকে মেশিনের মাধ্যমে ভেঙ্গে ছোট ছোট টুকরায় বের করে আনা হয়। শুধুমাত্র অল্প কেটে (২.২-৩.২ মি.মি.) পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা সম্ভব।

২। সেলাই বিহীন।

৩। রক্তক্ষরণ সাধারণত হয় না, হলেও সামান্য।

৪। অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাসপাতালে থাকতে হয় না, অপারেশনের পরেই বাড়ী চলে যাওয়া যায়।

৫। খাবার ব্যাপারে কোন বিধি নিষেধ নেই।

৬। চোখে সামান্য কাটা হয় বলে দ্রুত সেরে উঠে।

৭। প্রায় ব্যাথামুক্ত

স.আই.সি.এস (SICS), সেলাই বিহীন (মেশিন ছাড়া চোখ অল্প কেটে অপারেশন)।

১। এই পদ্ধতিতে ফ্যাকো পদ্ধতির চেয়ে একটু বেশী কাটতে হয়। সাধারণত ৩.৫মি.মি. থেকে ৫.৫মি.মি.

২। এই অপারেশন সেলাই বিহীন।

৩। রক্তক্ষরণ সাধারণত হয়না, হলেও সামান্য।

৪। মাঝে মধ্যে হাসপাতালে ১ দিন থাকতে হয়।

প্রচলিত সেলাইযুক্ত ছানি অপারেশনের অসুবিধাঃ

১। এই অপারেশনে ঘোলা লেন্সটিকে একসাথে বের করে আনা হয়। ফলে বেশি কাটতে হয়।

২। বেশি কাটার কারণে সেরে উঠতে একটু সময় লাগে।

সিএসসি আর-এ কেন ছানি অপারেশন করাবেন?

১। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া সি.এস.সি.আর-এ অযথা অপারেশন করা হয় না।

২। সাধারণত ছানি ছাড়াও, রোগীরা উচ্চরক্ত চাপ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ইত্যাদি জটিল রোগেও ভুগেন। তাই অপারেশনের সময় কোন অনাকাঙ্খিত, জটিল শারীরিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, সঙ্গে সঙ্গে এই সকল রোগের চিকিৎসা দেওয়া চট্টগ্রামে একমাত্র সি.এস.সি.আর-এ সম্ভব। তাতে রোগীর দৃষ্টি শক্তি পুনরুদ্ধার এবং দ্রুততম সময়ে রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব।

সি.এস.সি.আর-এর কনসালটেন্ট:

অধ্যাপক (ডাঃ) এস. এম. তারেক

এমবিবিএস; ডি.ও (ডি.ইউ); এম.এস. (লন্ডন)

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চক্ষু বিভাগ,

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও  ফ্যাকো সার্জন, কন্টাক্ট লেন্স বিশেষজ্ঞ,

ডাঃ এম. জয়নাল আবেদীন

এমবিবিএস, এফসিপিএস (চক্ষু), ডি.ও

সহকারি অধ্যাপক

ট্রেইন্ড ইন মেডিকেল রেটিনা

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

 

ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন

এমবিবিএস, এমএস (চক্ষু বিভাগ)

চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল